Monday, November 12, 2012

দেশে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ হচ্ছে ধূমপান

দেশে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ হচ্ছে ধূমপান
 














ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০১২ (বাসস) : দেশে প্রতি বছর প্রায় এক হাজার ৮শ’ অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ হচ্ছে ধূমপান। অর্থাৎ ধূমপানের সময় বিড়ি ও সিগারেটের শেষাংশ থেকে বিপুল সংখ্যক অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকে। এজন্য বাজার, শপিং মলসহ সব জনসমাগম স্থল ধূমপানমুক্ত রাখা সম্ভব হলে ধূমপানজনিত অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ অনেকাংশে সম্ভব। 

আজ সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর মিলনায়তনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের করণীয়’ বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ।

বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট)-এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসাবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। 

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন। এতে বক্তৃতা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. মোস্তফা জামান এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সভাপতি আহমেদ শরীফ প্রমুখ।
প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ বলেন, ধূমপান অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কারণ। ১২ ভাগ অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী ধূমপান। তই প্রতিষ্ঠা কাল থেকেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ধূমপানকে নিরুৎসাহ যুগিয়ে আসছে। সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ২৫৪টি ফায়ার স্টেশন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। আজ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে কেউ ধূমপান করতে পারবে না। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্ব-স্ব এলাকায় প্রতি মাসে কমপক্ষে ৪টি জনসংযোগ করা হয়। এসব জনসংযোগ কর্মসূচিতে ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে যুক্ত করা হবে।

অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশু ও নারীদের ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগসহ নানা রকম রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এজন্য উন্নত দেশগুলো পরোক্ষ ধূমপান থেকে শিশু-নারীদের রক্ষায় সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত করেছে। আমাদেরও সব প্রতিষ্ঠান শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে হবে।
গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দীর্ঘস্থায়ী ধূমপান মানুষের গড় আয়ু ১০ বছর কমিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ধূমপায়ীদের মৃত্যু হয়েছে নানা রকম ভয়াবহ অসুখে, দীর্ঘদিন রোগে ভুগে। সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য ধূমপান বর্জন করা উচিত। পাশাপাশি তামাক কোম্পানিগুলোর সব রকম প্রচারণা নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

ডা. মোস্তফা জামান ২০০৪ সালের গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে বলেন, ধূমপানসহ তামাজজনিত কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায়। ধূমপান মানুষের আয়ু ক্রমশ: কমিয়ে ফেলে। তাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর অধূমপায়ী কর্মীদের স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিষ্ঠানের সব কার্যালয় ধূমপানমুক্ত করা দরকার।
চলচ্চিত্রাভিনেতা আহমদ শরীফ ব্যক্তি জীবনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমি গত ২২ বছর ধূমপান করি না। ধূমপান বন্ধ করায় আমার শারীরিক ও মানসিক মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে।

এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ধূমপায়ীর ধূমপানের ফলে অধূমপায়ীর অধিকার ক্ষুণœ হয়। বাংলাদেশ প্রায় এক কোটি নারী পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।