Monday, April 20, 2015

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গের দায়ে জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল এর শাস্তি দাবি

 ধূমপান ও তামাকজাত ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) ভঙ্গ করে সিগারেটের প্রচারণার প্রতিবাদে জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই), ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানিসহ আইন লঙ্ঘণকারী সব তামাক কোম্পানিকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। আজ ২০ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসকাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়। অবস্থান কর্মসূচি শেষে প্রতিবাদী পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রতিনিধি আলমগীর সিকদার এবং নবীন ইকরাম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ডিটিআই কর্তৃক জেটিআই এর ডরহংঃড়হ ব্রান্ডের সিগারেট বিপণন কার্যক্রমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ৫ এর (১) এর (ক)(খ) ধারা ভঙ্গ করে ব্যাপকভাবে ধূমপানের বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে সিগারেট ক্রয়ে উৎসাহিত করছে। উক্ত কোম্পানী নানা স্থানে ফ্রি সিগারেট বিতরণ করছে। পাশাপাশি জনসাধারণকে উৎসাহিত ও প্রলোভনের মাধ্যমে টি-শার্ট, মোবাইল ফোন, রাইস কুকার, সিলিং ফ্যান, ম্যাজিক বার্নার বিতরণ করছে এবং বিক্রয়কেন্দ্রে বড় বড় ছাতা ফ্রি বিতরণ করছে। এছাড়া বিভাগীয় শহরে বিভিন্ন দোকানদারকে তাদের ব্রান্ড পরিচিতির জন্য ডরহংঃড়হ সিগারেটের লোগো ও বিভ্রান্তিকর শব্দ সম্বলিত টং দোকান ফ্রি বিতরণ করছে। এ সকল দোকানে সিগারেটের ব্রান্ড ও লোগো সম্বলিত পোষ্টার প্রচার করছে যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পরিপন্থী।
নাটাব এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাফফর আহমেদ পল্টু বলেন, উন্নত দেশগুলোতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে ধূমপানের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে কমছে। এজন্য ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি), ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনাল, জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) সহ বহুজাতিক কোম্পানীগুলো প্রতারণা ও আইন লঙ্ঘণের মাধ্যমে মরণঘাতি পণ্য সিগারেটের বাজার বৃদ্ধি করতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আইন লঙ্ঘণকারী সব কোম্পানিকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।


মানবিকের টেকনিক্যাল এডভাইজার রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ১২ ধারায় বলা হয়েছে- “তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও উহার ব্যবহার ক্রমাগত নিরুৎসাহিত করিবার জন্য উদ্বুদ্ধ এবং তামাকজাত সামগ্রীর শিল্প স্থাপন, তামাক জাতীয় ফসল উৎপাদন ও চাষ নিরুৎসাহিত করিবার ল্েয সরকার প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।” অর্থাৎ জনস্বাস্থ্য রার জন্য বর্তমান আইনে তামাকের উৎপাদন এবং শিল্প স্থাপন নিরুৎসাহিত করণে জাতীয় পলিসি প্রণয়নের কথা উল্লেখ রয়েছে।

নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, আইন লঙ্ঘণ করে সিগারেটের প্রচারণা করলে তিনমাস কারাদণ্ড এবং ১ ল টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবে এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দন্ডের দ্বিগুন হারে দন্ডনীয় হইবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তামাক কোম্পানিকে শাস্তি প্রদান করা হয়নি।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশের ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, গত ১৯ মার্চ ২০১৫ তারিখ ঢাকার রেডিসন হোটেলের ব্লু-ওয়াটার গার্ডেনে ডিটিআই ও জেটিআই  যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের ব্যাকস্ক্রীনে ডরহংঃড়হ সিগারেটের প্যাকেট এবং লোগো প্রদর্শন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পরিপন্থী। এছাড়া প্রতি দোকানে একটি বড় আকৃতির স্টীকার সাটানো হয়েছে যাতে ২টি সিগারেটের প্যাকেট ও বিভিন্ন তথ্য জনসাধারনের জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে যা আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বাদসার সভাপতি এডভোকেট মো. মাহবুব আলম বলেন, জনস্বাস্থ্য রায় সরকার কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হলেও ডিটিআই ও জেটিআই আইন অমান্য করে বিভিন্ন উপায়ে জনসাধারণকে ধূমপানে প্রলুব্ধ করার যে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মাঠপর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম প্রতিহত করা না গেলে জনস্বাস্থ্য প্রচন্ডভাবে হুমকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আইন মোতাবেক উক্ত কোম্পানীদ্বয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে ভবিষ্যতে কোম্পানীদ্বয় সতর্ক হবে এবং আইন মেনে চলতে বাধ্য হবে।

বক্তারা জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ডিটিআই ও জেটিআইসহ অন্যান্য সকল তামাক কোম্পানী কর্তৃক আইন ভঙ্গের অভিযোগ প্রস্তুত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাষ্ট্রিজ ও জাপান টোব্যাকো ইন্ডাষ্ট্রিজ দ্বয়ের (আকিজ চেম্বার, ৭৩ দিলকুশা বা/এ, ঢাকা-১০০০) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও অন্যান্য পদপে গ্রহণের আহ্বান জানান।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন স্পন্দন এর সিদ্দিক রহমান, সিরাক বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি জিসান মাহমুদ, মাধবিকার নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক, টিসিআরসি (ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি) প্রতিনিধি মো: মহিউদ্দিন, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম সরকার, নাটাব এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার খলিলউল্লাহ প্রমুখ।

দৈনিক সংবাদ

দৈনিক আমাদের সময়

দৈনিক ইনকিলাব



দৈনিক জনতা


The Daily Sun

No comments:

Post a Comment